ডাবের পানি কি ওরস্যালাইনের পরিপূরক হয়?

ডাবের পানি আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ এটাকে ঐশ্বরিক  কিছু মনে করে থাকেন, এটা যেন সর্ব রোগের মহৌষধ। বমি করলে ডাবের পানি। পায়খানা করলে ডাবের পানি। ঘেমে গেলে ডাবের পানি। আবার অনেকে মনে করে এটা খেলে শৌর্য বীর্য বাড়ে।

মজার কথা হলো, ডাবের পানিতে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব কম, তবে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। আমরা যে খাবার স্যালাইন খাই, সেখানে যে পরিমান সোডিয়াম থাকে, তা ডাবের পানি দিয়ে পূরন করতে গেলে ৪ টা ডাব খেতে হবে। এদিকে সোডিয়ামের পরিমাণ ঠিক করতে গিয়ে শরীরে পটাশিয়াম হয়ে যাবে প্রয়োজনীয় পরিমাণের ৪ গুণ। যেটা অবশ্যই ভাল কিছু হবে না আপনার হার্টের জন্য।


এবার আসেন দামের কথায় আসি। একটা ডাবের দাম বর্তমানে সর্বোচ্চ  ১০০ টাকা। আর একটা ওরস্যালাইন এর দাম মাত্র ৫ টাকা। যেখানে সব রকমের লবন যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম মানুষের শরীরের সাপেক্ষে সমসত্ব করে বানানো হয়েছে।

এখন চিন্তা করেন, সারাদিন ঘেমে কিংবা বমি করে আপনি বেশ কিছু সোডিয়াম লস করে ফেলছেন বডি থেকে। এই সোডিয়াম এর ঘাটতি পূরন করতে আপনি ৫ টাকার স্যালাইন খেলেন। এই স্যালাইন আপনার সোডিয়াম যতটুকু কারেক্ট করবে, সেই পরিমান কারেক্ট ডাব খেয়ে করতে গেলে লাগবে ৪০০ টাকার ডাব। সাথে তো আছে Potassium বেড়ে যাবার ভয়। Heart এর রোগী কে ডাব খাইয়ে মেরে ফেলার ইতিহাসও চোখে দেখা।

তাই অতিরিক্ত ঘাম, বমি বা ডায়রিয়া হলে ৫ টাকার একটা স্যালাইন খান। ডাবের এই হাইপের জন্যই আজ ডাবওয়ালাদের এই সিন্ডিকেট। এটা সত্যিকার অর্থেই স্যালাইনের থেকে কম কার্যকর এবং আলাদা কোন স্বাস্থ্য সুবিধা এতে নেই।

বিঃ দ্রঃ পুষ্টিকর পানিয় হিসেবে পরিমিত পরিমাণ ডাবের পানি খাওয়া যেতেই পারে, আল্লাহর দেয়া একটা নেয়ামত এটি। কিন্তু সব রোগের সমাধান ডাবের পানি নয়। যে রোগের যেমন চিকিৎসা, সে রোগে তেমন ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।


Post a Comment

Previous Post Next Post