হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে যে সকল নিয়ম কানুন মানা উচিত? হানিম্যান তাঁর ক্রনিক ডিজিজ গ্রন্থে রোগীর পথ্যাপথ্য সম্বন্ধে একটা তালিকা দিয়েছেন । তাঁর অর্গানন গ্রন্থেও এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত উল্লেখ আছে। কিন্তু এই বিষয়ে তার সবচেয়ে মূল্যবান উপদেশ বলে আমি যেটা মনে করি সেটাই প্রথমে আলোচনা করছি। 

হ্যানিম্যান বলেছেন রোগীকে আরোগ্য করাই যখন চিকিৎসকের একমাত্র ব্রত তখন পথ্যাপথ্য এবং আনুষঙ্গিক নিয়মাবলী সম্পর্কে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে অবশ্যই রোগীর অবস্থা এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজনবোধে রোগীর স্বার্থেই বিধি-নিয়মের কড়াকড়ি যথেষ্ট শিথিল করে রোগীর অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে নিতে হবে। রোগীর পক্ষে মেনে চলা সম্ভব নয় এমন সব বিধি-নিষেধের কড়াকড়ি করলে আরোগ্য লাভ তো দূরের কথা রোগীর পক্ষে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করাই হয়তো সম্ভব হবে না। অনেকের ধারণা বিধি-নিষেধের কড়াকড়ির ফলে আরোগ্য ত্বরান্বিত হবে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায় তার ফল হয় বিপরীত। কফি খাওয়া ক্ষতিকর বলে হ্যানিম্যান বলেছেন। কিন্তু কোন ব্যক্তি হয়তো শিশুকাল থেকেই কফি খেতে অভ্যস্ত। তার ক্ষেত্রে কফি একেবারে বন্ধ করলে তার হয়তো নানা রকম মানসিক অথবা দৈহিক অবসাদ জনিত লক্ষণ এর সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে কফির অভাবটা আরোগ্যের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। কাজেই একেবারে কড়াকড়ি ভাবে সবকিছু বন্ধ না করে মধ্যপন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়।

পথ্যাপথ্য নির্বাচনে দুটি বিষয়ে আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে (১) ঔষধ এর ক্রিয়া নষ্ট হয় বা ব্যাহত হয় এমন কিছু যেন রোগী না খান বা না করেন এবং (২) রোগী যে রোগে ভুগছেন সেই রোগের পক্ষে ক্ষতিকর কোন কিছু না খান বা করেন।

পেঁয়াজ থুজার প্রতিষেধক। কাজেই কোন রোগীকে থুজা ঔষধ প্রয়োগ করলে তাকে পেঁয়াজ খেতে নিষেধ করা উচিত। এইরকম প্রত্যেক ঔষধের যে প্রতিষেধক তালিকা দেওয়া আছে রোগীর খাদ্য তালিকা থেকে সেই সব খাদ্য বাদ দেওয়াই উচিত। এখানে, একটা কথা আমি বলতে চাই যে, শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্রিয়া কোন খাদ্যই সম্পূর্ণ নষ্ট করতে পারে না তবে তার ক্রিয়া আংশিক ব্যাহত হতে পারে মাত্র। নিয়মিত পেঁয়াজ খেয়ে চলছে এমন রোগীতেও থুজা ভালভাবে ক্রিয়াশীল দেখেছি এবং দেখছি। কফি, কর্পূর, হিং ইত্যাদিতে ঔষধজ গুণ বর্তমান থাকায় এগুলি চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর পক্ষে গ্রহণ না করাই ভাল। কিন্তু এগুলি গ্রহণ করলেও ঔষধ কাজ করবে এ বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তবে ঘরোয়া ঔষধ ব্যবহার খুবই ক্ষতিকর। যেমন অনেকে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সাথে দুর্বার রস, শিউলি পাতার রস, কালোমেঘ, চিরতার জল, ইসুবগুলের ভুষি ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন। এগুলি কিছুতেই অনুমোদন করা চলে না। কারণ এদের ঔষধজ ক্রিয়া, ঔষধের ক্রিয়ার সাথে মিশে ভুল চিত্র দেবে-- যার ফলে দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র নির্বাচনে খুবই অসুবিধা হবে। কাজেই এই ধরণের ঘরোয়া ঔষধ একেবারেই নিষিদ্ধ করতে হবে। এখানে কোন আপোষ করলে রোগীর পক্ষে তা অবশ্যই ক্ষতিকর হবে।

হৃদ-রোগের রোগীকে বেশি পরিশ্রম করতে দেওয়া যেমন:  কখনই উচিত নয় তেমনি মেদবহুল রোগীর পক্ষে পূর্ণ বিশ্রাম ক্ষতিকর। অপ্রকৃত চির-রোগে (Pseudo Chronic disease) রোগের কারণ অনুসন্ধান করে তার প্রতিকার করতে না পারলে কোন ঔষধেই তাকে আরোগ্য করা সম্ভব হবে না। রোগীকে ঔষধ দেওয়া চিকিৎসকের একমাত্র কাজ নয়। সঠিক পথ্য নির্বাচন, আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহের যথোপযুক্ত প্রয়োগ কৌশল এবং রোগী আরোগ্যের সহায়ক যে কোনো ব্যবস্থার সময়মতো সাহায্য গ্রহণ চিকিৎসকের একান্ত কর্তব্য। হাড় ভেঙ্গে গেলে সঠিকভাবে জোড়া লাগার জন্য প্লাস্টার (Plaster) করা, পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীর জন্য ফিজিওথেরাপির (Physiotherapy) সাহায্য গ্রহণ করা, ডিপথিরিয়া রোগীর জীবন রক্ষার  প্রয়োজনবোধে ট্রেকিওটমির সাহায্য নেওয়া, কলেরা রোগীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনবোধে স্যালাইনের সাহায্য নেওয়া প্রভৃতি নানাবিধ সাহায্যকারী চিকিৎসা সমূহ চিকিৎসককে অবশ্যই জানতে হবে এবং প্রয়োজনমতো কাজে লাগাতে হবে। অস্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য কতইনা দৈহিক ও মানসিক রোগ দেখা দিচ্ছে। ঔষধ প্রয়োগের সাথে সেই অস্বাভাবিকতা দূর করতে না পারলে আরোগ্য হবে কিভাবে ? সেই জন্য হ্যানিম্যান চিকিৎসককে Preserver of health হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন। শুধুমাত্র যথাযথ উপদেশ, সমতাপূর্ণ খাদ্য তালিকা এবং স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় নির্দেশাবলীর দ্বারা বহু রোগী আরোগ্য লাভ করে থাকেন। মুক্ত বায়ুতে ভ্রমণ, যোগাসন ইত্যাদিও রোগ আরোগ্যের যথেষ্ট সাহায্য করে। কাজেই Diet ও Regimen  নির্বাচন করার আগে চিকিৎসককে উপরোক্ত বিষয়গুলির কথা সব সময় স্মরণ রাখতে হবে।

এবারে দেখা যাক হ্যানিম্যান Diet ও Regimen সম্বন্ধে কি নির্দেশ দিয়েছেন।

অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থে তিনি লিখেছেন তরুণ রোগে Diet ও Regimen সম্বন্ধে কোনরকম কড়াকড়ি করার প্রয়োজন নেই। রোগী যা খেতে চায় বা যে ভাবে থাকতে চায় তাকে তা করতে দেওয়া যেতে পারে। কারণ, সাধারণত তরুণ রোগে রোগীর পক্ষে ক্ষতিকর কোন খাদ্য রোগী চায়না-- বরং এই সব খাদ্যের প্রতি একটা তীব্র অনিচ্ছা দেখা যায়। তার কারণ হলো রোগের আকস্মিকতা, ভয়াবহতা এবং উত্তেজক কারণ বর্তমান থাকা। তরুণ রোগ হঠাৎ আক্রমণ করে এবং ভীষণভাবে তার লক্ষণ প্রকাশ করে। জীবনীশক্তি এখানে চির-রোগের তুলনায় যথেষ্ট সতেজ থাকে। প্রকৃতির স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধী শক্তিতে জীবনীশক্তি তরুণ রোগের উত্তেজক কারণকে দ্রুত অপসারিত করার চেষ্টা করে। ফলে উত্তেজক কারণের সহায়ক এবং জীবনী শক্তিকে দুর্বলতর করার পক্ষে সহায়ক কোন খাদ্য বা ব্যায়াম ইত্যাদি রোগী স্বাভাবিকভাবেই চাইবে না। যদি চায়ও তবু সেই খাদ্য তাকে খেতে দিলে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে যে ডাক্তার ও রোগী উভয়ে বুঝতে পারবেন উক্ত খাদ্য তার পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা সম্বন্ধেও সেই একই কথা। নিউমোনিয়া রোগীর পক্ষে খোলা হাওয়া খুবই প্রয়োজনীয় কারণ ফুসফুসের Consolidation –এর জন্য অক্সিজেনের অভাব ঘটে-- অবশ্য জলো-হাওয়া বা  শীতের ঠান্ডা হাওয়ার কথা বলছি না। কিন্তু হিপার সালফার রোগী কিছুতেই খোলা হাওয়া চাইবে না, তাতে তার অস্বস্তি বাড়বে। কাজেই এই রোগীতে জোর করে তার মাথার কাছে জানালা খুলে রাখলে তার ক্ষতিই হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীর সব থেকে দূরের কোনো জানালা খুলে রাখাই শ্রেয়। কোন প্রদাহের ক্ষেত্রে সেঁক দিলে সাধারণত রোগী আরাম বোধ করে। কিন্তু এমন রোগীও আছে যার সেঁক মোটেই ভাল লাগেনা বরং আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা প্রয়োগ করতে চায়। এক্ষেত্রে জোর করে গরম সেঁক দিলে রোগীর ক্ষতি হবে। কাজেই তরুণ রোগে রোগীর পছন্দ মতো ব্যবস্থা করাই ভালো যদি না সেই ব্যবস্থা রোগীর পক্ষে অবশ্যম্ভাবী ক্ষতিকর বলে চিকিৎসক মনে করেন। যেমন Gastro-Enteritis এর রোগী যদি ভরপেট খাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তবে তা কখনোই অনুমোদন করা সম্ভব নয়।

চির-রোগের প্রকৃতি সম্পূর্ণ আলাদা। চির-রোগ অতি ধীরে শুরু হয়-- এমনকি রোগী বুঝতেও পারে না কখন সে রোগ আক্রান্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে যখন রোগ বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়ে যান্ত্রিক পরিবর্তন দেখা দেয় তখনই রোগীর অসুস্থতা ধরা পড়ে। জীবনীশক্তির প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে এতই নিস্তেজ হয়ে পড়ে যে ক্ষতিকর খাদ্য, ব্যায়াম ইত্যাদিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় না বরং ক্ষতিকর খাদ্য ইত্যাদির উপর একটা অস্বাভাবিক আকর্ষণ দেখা যায়। কারণ চির-রোগের প্রকৃতি হ’লো সুনির্বাচিত এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ ছাড়া আরোগ্য তো হবেই না বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে এবং এই বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশই সে সৃষ্টি করতে চাইবে। কাজেই চির-রোগের ক্ষেত্রে অতি বিচক্ষণতার সাথে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তবেই তার পথ্যাপথ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থাদি স্থির করতে হবে। হ্যানিম্যান যে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নির্দেশ করে গেছেন তা এই চির-রোগের নিরাময়ের জন্য বিশেষভাবে প্রযোজ্য।

দরিদ্র শ্রেণীর লোকদের জন্য তিনি কেবল মাত্র পেঁয়াজ ও লঙ্কার ব্যবহার সীমিত করতে বলেছেন, অন্য খাদ্যদ্রব্য সম্বন্ধে কোন প্রকার কড়াকড়ি করতে নিষেধ করেছেন। তার কারণ কি? দরিদ্র শ্রেণীর লোকের পক্ষে খাদ্যের কড়াকড়ি মেনে চলা প্রায় অসম্ভব। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র মত পথ্যের ব্যবস্থা করা তাঁদের সাধ্যের বাইরে। তাছাড়া ঔষধ এর পক্ষে ক্ষতিকর খাদ্যদ্রব্য তাঁরা কমই গ্রহণ করেন। যাই হোক, দরিদ্রের বেলায় যদি খাদ্যাখাদ্যের কড়াকড়ি ছাড়াই চিকিৎসা সম্ভব হয় তবে অন্য শ্রেণীর বেলাতেও তা হবে না কেন? আসলেই ধনী শ্রেণীর লোকেরা অধিকতর ও অস্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রণালীতে অভ্যস্ত। নানা ঔষধি গুণ সম্পন্ন এত বেশি জিনিষ ব্যবহার করেন যে সূক্ষ্ম শক্তির ঔষধ এর সঠিক উপলব্ধি করতে পারেন না। তাই হ্যানিম্যান তাদের বেলায় একটু বেশিমাত্রায় কঠোর হয়েছেন।

গন্ধদ্রব্য যথা সেন্ট, উগ্রগন্ধযুক্ত পাউডার, স্নো ইত্যাদি, সুবাসিত গোলাপজল, এমনকি গন্ধযুক্ত দাঁতের মাজন পর্যন্ত হ্যানিম্যান চির-রোগ চিকিৎসাকালে ব্যবহার নিষেধ করেছেন। যে কোন গন্ধদ্রব্যের  ক্রিয়া স্নায়ুর ওপর ডাইনামিসের ন্যায় কাজ করে। যদিও এই ক্রিয়া ক্ষণস্থায়ী তবু তা ওষুধের ডাইনামিক ক্রিয়া কে প্রভাবিত বা অংশতঃ বিঘ্নিত করার ক্ষমতা সম্পন্ন। কিন্তু বর্তমান যুগে মধ্যবিত্ত বা ধনী শ্রেণীর এই সব দ্রব্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করলে তাদের পক্ষে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়তো সম্ভব হবে না। কফি, নস্য এবং মাদক দ্রব্য ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ। ঔষধ এর ক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়া ছাড়াও এদের প্রত্যেকটির ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়টি উপেক্ষা করা যায় না। তবু কফির পেয়ালায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ মিশ্রিত বটিকা মিলিয়ে  বা মদের গ্লাসে ঔষধের পুরিয়া ঢেলে খেলেও ঔষধ এর ক্রিয়া হতে দেখেছি। আমাদের দেশে নস্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা নগন্য নয়। তাঁদের পক্ষেও নস্য ত্যাগ করে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা চালান অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। হালকা চা দিনে একবার বা দু'বার এর বেশি খেতে দেওয়া উচিত নয়, এমন কি সম্ভব হলে একেবারে বন্ধ করাই ভাল। ভিনিগার, খুব টক জাতীয় দ্রব্য, এমনকি টক ফল বেশি খেতে দেওয়া উচিত নয়। যেসব রোগীর ধাতুদৌর্বল্য আছে তাদেরকে মুরগি, ডিম ও মসলা দেওয়া খাবার বেশি খেতে দেওয়া উচিত নয়। যেসব স্ত্রীলোকদের মাসিক ঋতুস্রাব খুব কম হয় তাদেরকে লবঙ্গ, দারুচিনি, মুস্কিপাতি ইত্যাদি খেতে দেওয়া উচিত নয়। হজমের গোলমাল যুক্ত রোগীদের মসলা, লবঙ্গ, দারুচিনি, লঙ্কা, তিতা, মরিচ ইত্যাদি খেতে দেওয়া উচিত নয়। যেসব শাক সবজিতে পেটে গ্যাস জমে সেগুলি বর্জন করাই ভালো। ধূমপান যথাসম্ভব কমানো বা একবারই বর্জন করা ভাল।

পরিধেয় বস্ত্র সম্পর্কে হ্যানিম্যান বলেছেন, অন্তর্বাস সুতীর হওয়াই বাঞ্চনীয়। পশমের অন্তর্বাস ব্যবহার করা উচিত নয়। এটা অবশ্য তিনি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হিসাবেই নিষেধ করেছেন। মানসিক উত্তেজনাকর বিষয় সমূহ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা একান্ত দরকার-- যথা মানসিক দুশ্চিন্তা, অশান্তি, ভয়, দুঃখ, রাগ, অভিমান ইত্যাদি। ক্রমাগত মানসিক অশান্তির কারণ বর্তমান থাকলে আরোগ্যের পথে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নিয়মানুবর্তিতা, সংযত জীবনযাপন, কিঞ্চিৎ ব্যায়াম, ভ্রমণ, যোগাসন ইত্যাদিও রোগ আরোগ্যে যথেষ্ট সাহায্য করে। সিনেমা থিয়েটার ইত্যাদি দেখা, হাসি-ঠাট্টা, আনন্দ দায়ক গান শোনা ইত্যাদি নিষেধ তো নয় বরং আরোগ্যের পক্ষে সহায়ক। কিন্তু তাস খেলা, দাবা খেলা,  ইত্যাদি একেবারেই অনুমোদন করা উচিত নয়। কারণ এই সব খেলায় মানসিক চিন্তা, উদ্বেগ ইত্যাদি দেখা দেয় এবং স্নায়ুর ওপর যথেষ্ট চাপ পড়ে। রাত্রি জাগরণ, অনিয়ম, মানসিক দুশ্চিন্তা, ভয় ইত্যাদির ফলে অসুস্থতা দেখা দিলে সেই উত্তেজক অথবা বাহক কারণ দূর না করলে সুনির্বাচিত ঔষধেও আরোগ্যের  আশা বৃথা।

তথ্যসূত্র:
গ্রন্থের নাম: হোমিও সাথী, পৃষ্ঠা ১৯৪-১৯৯। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহু জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধের সংকলিত এই গ্রন্থটি লিখেছেন ডাক্তার এস পি দে (সূর্য্য পদ দে)।

ডাক্তারের পরামর্শ ও ঔষধ নিতে কল করুন +8801568076933


Post a Comment

Previous Post Next Post