এলার্জির কিছু কার্যকারী হোমিওপ্যাথিক ঔষধ।তার আগে জানা দরকার এলার্জি কি এবং কেন হয়।
আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি ত্রুটি হল এলার্জি, যেখানে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। বহিরাগত কোন বস্তুর বিরুদ্ধে দেহের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার একটি প্রতিক্রিয়া হল এলার্জি। অন্যান্য মানুষের পক্ষে সেই বহিরাগত বস্তুটি কিন্তু ক্ষতিকর নয়। স্বাস্থ্যবান মানুষের ক্ষেত্রে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জীবাণুর আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু যাদের এলার্জি রোগ আছে তাদের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি, ক্ষতিকর নয় এমন বহিরাগত বস্তুর, যাকে এলার্জেন বলা হয়, তার বিরুদ্ধে অতি-সক্রিয় হয়ে ওঠে। যে সব মানুষদের এলার্জি আছে, তারা একাধিক বস্তুর প্রতি সংবেদনশীল। এছাড়া রক্তে এ্যালার্জী, ইসিনোফিল অন্যান্য রক্ত কোষ যথা- লোহিত, স্বেত রক্ত কণিকার মত অস্থি মজ্জা (bone marrow) থেকে উৎপন্ন হয়। এটি স্বেত রক্ত কণিকার একটি উপাদান। ইসিনোফিল ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণু বা পরজীবী মেরে ফেলে। এরা সাইটোটক্সিক অণু, সাইটোকাইনেজ নিঃসরণের মাধ্যমে এ কাজটি করে। এছাড়াও এরা পরজীবী কিটের ও ডিম্ব ধ্বংশ করে এবং এলার্জি প্রতিক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই রোগ চিরতরে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা, সেটাও যেন সঠিক সমন্বয়ে থাকে, যেমন ভিটামিন-A,B,C,D ও K। খনিজ পদার্থ, মিনারেল সহ অরো অন্যান্য উপাদান গুলো। আর এটা করতে পারে একমাত্র নিজের শরীর, তাই তাঁকে সঠিক উপাদান গুলো সরবরাহ করতে হয় বাইরে থেকে। অথাৎ আহারে আনতে হবে পৌষ্টিক আহার। তা পাওয়া যাবে কাঁচা পাকা ফল এবং সবুজ সতেজ শাকসব্জী ( স্যালাট থেকে)। সম্ভব হলে দুধ সহ মাছ মাংস ডিম এবং ফাস্ট ফ্রুট খদ্য তালিকা থেকে বাদ রাখলে ভাল, এইগুলো হজম করতে শরীরের যে শক্তি খরচ হয় তাতে শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হতে অন্তরায় হয়।বলা যেতে পারে বিরিয়ানি, চাউমিন,এগরোল সহ অন্যান্য বাইরে তৈরি খাবার, এগুলো সৌখিন খাবার দুই মাসে একবার খেলে শরীর মেনে নেয়, এর বেশি খেলে শরীরের বাইরে ভিতরে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতি করে, আর চর্ম শরীরে সবচেয়ে বড় অঙ্গ। চর্মরোগ সারাতে বাইরে থেকে নয় ভিতর থেকে সারিয়ে তুলতে হয় তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বাড়ানোর প্রতি নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে ভিটামিন ডি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে শরীরের অ্যালার্জি প্রতিরোধের ক্ষমতা বেড়ে যায়। বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পায় না। আমাদের ভারত বর্ষে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায় তা'হলো সূর্যরশ্মিতে, আমরা সকালে ৩০মিঃ থেকে ৪৫মিঃ সূর্যরশ্মি শরীরে লাগালে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পেতে পারি, বলে রাখা ভালো কোন Oral medecine সূর্যরশ্মিতে পাওয়া ভিটামিন ডি'র পরিপূরক নয়।
কয়েকটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কথা আলোচনা করছি
১), HISTAMINUM 200
ধুলোয় এবং গাঢ় সুগন্ধি থেকে এলার্জি।
২), JUSTICIA AD. 30
ধুলো থেকে এলার্জি, সাথে বিশেষ লক্ষ্মণ সন্ধ্যায় নাক থেকে জল পড়বে ও হাঁজি হবে অল্প কাশিও থাকবে। ।
৩), ARGENTUM NIT 200
মিষ্টি পছন্দ করে কিন্তু সেই মিষ্টি খেলে এলার্জি হয় সাথে পেটের গন্ডগোল দেখা দেয়, এতে এই বিশেষ উপকারী। । ।
৪). CARBO VEG 30
ASPIRIN জাতীয় ঔষধ, বাসি পচা খাবার থেকে এলার্জি বিশেষ লক্ষ্মণ যে সকল খাবার খেলে এলার্জি হয় রোগী সেই খাবার দিকে খাওয়ার ইচ্ছে বেশি থাকে।
৫). DOLICOS 30
গর্ভাবস্থায় মায়েদের এলার্জি হলে এই ঔষধ বিশেষ উপকারী। ৷
৬).PETROLEUM 200
বাঁধাকপি খেলে এলার্জি বিশেষ উপকারী।
৭),AILANTHUS 200
ফুলের গন্ধে এলার্জি হলে এই ঔষধ বিশেষ উপকারী।
৮), RUTA G. 200
এই ঔষধের বিশেষ লক্ষ্মণ হটাৎ করে মনে হয় চোখে ধুলো ঢুকে আছে, চোখ লাল ও ব্যথা হচ্ছে সেক্ষেত্রে এই ঔষধ বিশেষ উপকারী।
৯). RHUS TOX 200
শরীরের স্থানে স্থানে মশার কামড়ের মত দাগড়া দাগড়া হয়ে অত্যন্ত চুলকায় আবার আপনি থেকেঅদৃশ্য হইয়া যায়। অধিক ঠান্ডা লাগা ঘমার্ক শরীরে স্থান করা চিংড়ি কাকড়া মাংস আহার করা বা পরিপাক ক্রিয়ার গোলযোগ হেতু এই পীড়া হইয়া বৃষ্টির জলে বা বর্ষা কালে বৃদ্ধি বা ঠান্ডা জলে বৃদ্ধি তাহলে এই ঔষধ কার্যকর। -
১০), APIS MEL 200. গোলাপী রংয়ের উদ্ভেব সমস্ত শরীরে ছড়াইয়া পড়ে দাগড়া দাগড়া হইয়া ফুলিয়া উঠে চুলকায় হুল ফুটানো বেদনা ও জ্বালা করে ঠান্ডা জলে আরাম, তাহল এই ঔষধ কার্যকর।
১১).DULCAMARA 30.
ভিজা ঠান্ডা ম্থানে বসবাসের ফলে বা মৌসুম পরিবর্তন হইলে ডালকামারা উপকারী ।স্ত্রী লোকদের ঋতু স্রাবের পূর্বে এলার্জি হলে খুব কর্যকরি।
১২), ARSENIC ALB. 200 নতুন বা পুরাতন উভয় প্রকার এলার্জি তে চাকা চাকা ফুলে উঠে, জ্বালা করে চুলকাই ঠান্ডা জলে বৃদ্ধি আবার গরম জল বা গরম তাপে কম সাথে জল পিপাসা এবং রোগী কোন জায়গায় স্থির থাকে না মানে অস্থিরতা, তাহলে এই ঔষধ কার্যকর। ।
১৩), HYDRASTS Q + HYGROPHILA Q + URTICA URENS Q + FAGOPYRUM Q 10:10:10:10 = 40 ফোঁটা জলের সাথে দিনে তিন বার খেতে হবে।
এখন কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা কথা বলছি
১). খাবার দোষে এলার্জি হলে প্রমাণ সাইজের দুই টি পাকা কলা খেতে হবে। পাকা কলা মেটাবলিজম বৃদ্ধি হয় শরীরের র্যাস কমাতে সহায়তা করে। ৷৷ ।
২).ঘৃতকুমারী (ALO VERA) জেল দুই চামচ এক কাপ হাল্কা গরম জলে মিশিয়ে পেষ্ট বানিয়ে শরীরে লাগাতে হবে, তবে গৃতকুমারী পাতা টি পরিণত গাছের পারিনিত পাতা হওয়া চাই। পাতা'টির গোড়া র দিকে কেটে গোড়া টা উল্টো করে কিছুক্ষণ রাখতে হবে, যতক্ষণ পাতা থেকে হলুদ রঙের কস সম্পূর্ন না বের হয়।
বিশেষ কথা জেনে রাখা ভালো।
শরীর কে রোগ মুক্ত করতে প্রতিদিন আহারে ৫০% খাবার ফল এবং স্যালাট খান অথাৎ কাঁচা পাকা ফল কাঁচা সব্জি খান এতে শরীরে পটাসিয়াম ও সোডিয়াম পরিমাণের সমতা বজায় রাখে। পটাসিয়াম ও সোডিয়াম ১ঃ১ থাকলে কোন রোগ আক্রান্তের হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে । হলেও autophagy মাধ্যমে শরীর তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়।
Post a Comment