পাইলসের সমস্যায় নারী-পুরুষ অনেকেই ভুগে থাকেন। এটা বেশ যন্ত্রণাদায়ক একটা রোগ। তবে অনেকেই অহেতুক লজ্জায় রোগটি গোপন রাখেন এবং জটিলতা বাড়ান। অথচ কিছু নিয়ম মেনে চললে এই রোগ ঠেকানো যায়।


পাইলস রোগ অবহেলা করলে যে ধরনের বিপদ হতে পারে ?



আবার সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করে ভালোও থাকা যায়।

মানুষের মলদ্বারের দৈর্ঘ্য ২-৩ ইঞ্চি। এর ওপরের অংশকে বলে রেকটাম। রেকটামের নিচের অংশ তথা মলদ্বারের আশপাশে কিছু রক্তনালি থাকে, যাকে বলে রেকটাল ভেইন। এই রেকটাল ভেইনগুলো যদি কোনো কারণে ফুলে যায় বা প্রদাহ হয় তাহলে পায়খানার সময় রক্তপাত হতে পারে। এই অবস্থাকে পাইলস বা হেমোরয়েড বলে। এটা সাধারণত দুই ধরনের হয় :


এক্সটারনাল হেমোরয়েড


এ ক্ষেত্রে মলদ্বারের বাইরের রক্তনালিগুলোতে প্রদাহ হয়। ফলে পায়খানা করার সময় ব্যথা হয়, রক্ত মিশ্রিত পায়খানা হয়, মলদ্বারের আশপাশে চুলকানি হয়, ফুলেও যায়।


ইন্টারনাল হেমোরয়েড


এ ক্ষেত্রে মলদ্বারের অভ্যন্তরীণ রক্তনালিগুলোতে প্রদাহ হয়ে ফুলে যায়। পায়খানার সঙ্গে স্বাভাবিক রক্ত যায়। অনেকের পায়খানা নরমাল হলেও টয়লেট পেপারে রক্ত দেখা যায়। এ ছাড়া পায়খানার সময় ব্যথা হয়, মলদ্বার দিয়ে মাংস পিণ্ডের মতো বেরিয়ে আসে, মলদ্বারে চুলকানি থাকে ইত্যাদি। রোগের জটিলতা বিবেচনায় ইন্টারনাল হেমোরয়েডের আবার চারটি স্তর রয়েছে।


কারণ

  1. কোষ্ঠকাঠিন্য বা অনিয়মিত পায়খানা
  2. তীব্র ডায়রিয়া হলে
  3. গর্ভাবস্থা থাকলে
  4. ওবেসিটি তথা অতিরিক্ত শারীরিক ওজন
  5. দীর্ঘদিনের কাশি ইত্যাদি।

 

উপসর্গ

  1. পায়খানার সময় রক্ত যাওয়া
  2. পায়ুপথের আশপাশে চুলকানি
  3. পায়খানার সময় ব্যথা
  4. মলদ্বার দিয়ে মাংসপিণ্ড বেরিয়ে আসা
  5. অনিয়মিত মলত্যাগ ইত্যাদি।


"পাইলস রোগের চিকিৎসা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সরাসরি কল করুন 01568076933

 

পরীক্ষা


অনেক সময় রোগীর সমস্যা জেনেই পাইলস রোগটি নির্ণয় করা যায়। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে। যেমন :


  1. ডিজিটাল রেকটাল এক্সামিনেশন
  2. প্রক্টোস্কপি
  3. কোলোনোস্কোপি
  4. সিগময়ডোস্কোপি ইত্যাদি।


 

প্রতিরোধে করণীয়


গবেষণায় দেখা গেছে, মোটামুটি ৭০ শতাংশ পাইলসের জন্য দায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বেঁচে থাকলে পাইলস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। পাইলস প্রতিরোধে আরো যা করা উচিত তা হলো :


  1. নিয়মিত আঁশজাতীয় খাবার এবং শাক-সবজি বেশি খাওয়া
  2. দৈনিক ২-৩ লিটার পানি পান করা
  3. লাল মাংস কম খাওয়া
  4. দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা
  5. তেলে ভাজা কিংবা চর্বিজাতীয় খাবার কম খাওয়া ইত্যাদি।


 


চিকিৎসা ও পরামর্শ


পাইলসের ভালো চিকিৎসা রয়েছে। সাধারণত ক্রিম/অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করে কিছু ওষুধ খেলেই এই রোগ সেরে যায়। যাঁদের পাইলস প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তথা যাঁদের কেবল পায়খানার সময় হালকা ব্যথা হয় কিংবা রক্ত যায় এবং মলদ্বারের আশপাশে চুলকানি আছে, তাঁরা নিচের নিয়মগুলো মেনে চললে উপকার পাবেন।


  1. প্রতিদিন ৪ চামচ ইসুপগুলের ভুসি দিয়ে দৈনিক ২ বেলা শরবত খান (দুই মাস)
  2. প্রতিদিন ২-৩টা আপেল খান এক মাস
  3. প্রত্যহ ২-৩ লিটার পানি পান করুন
  4. তেলে ভাজা খাবার ও লাল মাংস পরিহার করুন
  5. যেসব খাবার খেলে শক্ত পায়খানা হয় তা পরিহার করুন
  6. কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা ডায়রিয়া থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা নিন
  7. পাইলসের সমস্যা বেশি মনে হলে বিলম্ব না করে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


মনে রাখবেন, অহেতুক চক্ষুলজ্জার ভয়ে পাইলসকে গোপন রাখলে বা অবহেলা করে চিকিৎসা না নিলে জটিলতা বাড়ে।


পাইলস রোগের চিকিৎসা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সরাসরি কল করুন 01568076933

Post a Comment

Previous Post Next Post