আমাশয় কেন হয় ? আমাশয় কত প্রকার কি কি ? আমাশয় এর লক্ষণ ও চিকিৎসা

আমাশয় কেন হয় ? আমাশয় কত প্রকার কি কি ? আমাশয় এর লক্ষণ ও চিকিৎসা  আমাশয় কেন হয় ? (Why is diarrhea a disease)

  • আমাশয় কেন হয় ? আমাশয় কত প্রকার কি কি ? আমাশয় এর লক্ষণ ও চিকিৎসা

আমাশয় কেন হয় ? (Why is diarrhea a disease)

এন্টামিবা হিস্টোলিটিকা ' নামে এক ধরনের পরজীবী জীবাণু আছে । সেই জীবাণু দ্বারা বৃহদন্ত্রের সংক্রমণ ও প্রদাহকে আমাশয় বলে । আমাশায় আক্রান্ত রোগীর মল দিয়ে এই জীবাণুর সিট নির্গত হয় । এই সিস্ট কোনোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশে গিয়ে অন্য কোনো লোকের পেটে ঢুকলে সেই ব্যক্তিও সংক্রামিত হয় । আমাশয় সিস্ট সাধারণত খাবার পানির সাহায্যে একজন রোগীর মল থেকে অনেক লোকের খাবারে মেশে ।


আমাশয় কত প্রকার?

আমাশয় প্রধানত দুই প্রকার

১. আমিবায়াসিস / পুরাতন দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় ( Amoebiasis / Amoebic Dysentery )

২. সিগেলোসিস / তীব্র আমাশয়  ( Shigellosis / Bacillary Dysentery )


১. আমিবায়াসিস / পুরাতন দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় ( Amoebiasis / Amoebic Dysentery )


Entamoeba histolytica নামক এক ধরনের প্রোটোজোয়া দ্বারা এই রোগ গঠিত হয় সঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এই রোগ থেকে যায়। এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা জীবাণু বছরের-পর-বছর বৃহদন্তে থেকে যেতে পারে । বর্ষা ও শীত কালে এই রোগের আক্রমণ বেশি শিশুদের তুলনায় বয়স্কদের এ রোগ বেশি হয়


১. পুরাতন দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় এর প্রধান লক্ষণ?


১. বারবার মলত্যাগ । পায়খানার সাথে ফেনাযুক্ত বা বেশি আঠালো মিউকাস থাকে ।

২. পায়খানায় বসলে উঠতে ইচ্ছা হয়না মলত্যাগে ব্যথা হয় এবং ফুলে ওঠে

৩. মলে অম্ল গন্ধ। হয় বেশিরভাগ বাদামী রঙের পায়খানা হয়

৪. সম্পূর্ণ পেটে বা তলপেটে বা নাভির কাছে মোচড় দিয়ে ব্যথা হয়

৫. ক্ষুধা লাগে না চোখ মুখ বসে যায় এবং রোগীর শারীরিক দুর্বলতা থাকে

৬. সাধারণত জ্বর হয়ে থাকে

৭. সাধারণত এই রোগে ভোগার পর রক্তস্বল্পতা দেখা যায় এবং বৃহদন্ত্রের ভিতরে ঘা সৃষ্টি হয়।


পুরাতন ও দীর্ঘস্থায়ী আমাশয়ের সমস্যার সমাধানে কিছু পরামর্শ


কাচা কলার তরকারি দই খিচুড়ি মিষ্টিহীন ফিরনী এবং সাবুদানা এই সকল খাবার গ্রহণ করতে পারেন । হাত পায়ের আঙ্গুলের নখ কেটে পরিষ্কার রাখুন ফুটানো পানি পান করুন । শৌচ কার্য পড়ে এবং খাদ্য গ্রহণের পূর্বে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধৌত করুন। শাক দুধ এবং চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন


অতিরিক্ত সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে


২. সিগেলোসিস / তীব্র আমাশয়  ( Shigellosis / Bacillary Dysentery )


এটি আমাশয় খাদ্য ও পানি বাহিত একটি রোগ। সিগেলা ব্যাকটেরিয়া (যেমন Shigella flexneri, S. Dysenteriae, S.Boydii, S. sonneii ) বিশেষ করে S. Dysenteriae দাঁড়া প্রচন্ড রক্ত আমাশয় সৃষ্টি হয় এবং ফালমিনেটিং হয় 48 ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটতে পারে। S.Boydii মৃদু আকারের আমাশয় সৃষ্টি হয়। তবে শিশুদের মধ্যে এটি মহামারী আকারে ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। সমকামীদের মধ্যে সিগেলা ইনফেকশন দ্রুত বিস্তার লাভ করে। 100 বছর আগে সিগেলা নামের একজন জাপানি মাইক্রোবায়োলজিস্ট সিগেলা ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করে । এই সিগেলা ব্যাক টেরিয়ার আক্রমণে ডায়রিয়া জ্বর ও পাকস্থলীতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়


কিভাবে ব্যাসিলারি ডিসেন্ট্রি সৃষ্টি হয়?


দূষিত পানি দুধ এবং খাদ্যের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। মাছিও এই রোগের বিস্তারে সাহায্য করে। এই জীবাণু অস্ত্রের বংশবিস্তার করে জীবাণুর দেহের রক্ত পৌঁছায় না । ফলে বৃহদন্ত্রের জিল্লির বিভিন্ন স্থানে পচন ধরে। তার ফলে ক্ষত সৃষ্টি হয়। ‌‌ক্ষতগুলো অগভীরে এবং তার উপরিভাগে প্রদাহজনিত নিঃসরণ ও পলিমফ নিউক্লিয়ার শ্বেতকণিকা আচ্ছাদিত করে ।এর ফলে সমস্ত বৃহদন্ত্রে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই ব্যাসিলারি সৃষ্টি হয় এই জীবাণুর আক্রমণে যে ক্ষত হয় তা না শুকালে  (Chronic Ulcerative Colitis) রোগের সৃষ্টি হয়


তীব্র আমাশয় এর প্রধান লক্ষণ ?

১. জ্বর মাথাব্যথা পেটব্যথা ও রক্তসহ তরল পায়খানা

২. ঘনঘন মলত্যাগ পেট কামড়ানো ও পেট ভার ভার থাকা

৩. দিনে ত্রিশ থেকে চল্লিশ বার পর্যন্ত মলত্যাগ হতে পারে

৪. মলদ্বারে ব্যথা থাকে

৫. মল পরীক্ষায় রোগীর মলে পুঁজকোষ ও লোহিত রক্ত কণিকা পাওয়া যায় । 

৭.শরীর দুর্বলতা ও পানি স্বল্পতা দেখা দেয়


এই সকল লক্ষণ বা উপসর্গ আপনার দেখা দিলে আপনার বুঝতে হবে যে তীব্র আমাশয় হয়েছে


আমাশয় রোগীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ !


কাচা কলার তরকারি দই খিচুড়ি মিষ্টিহীন ফিরনী এবং সাবুদানা এই সকল খাবার গ্রহণ করতে পারেন । হাত পায়ের আঙ্গুলের নখ কেটে পরিষ্কার রাখুন ফুটানো পানি পান করুন । শৌচ কার্য পড়ে এবং খাদ্য গ্রহণের পূর্বে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধৌত করুন। শাক দুধ এবং চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন


মনে রাখবেন এই সকল সমস্যা দীর্ঘদিন শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর তাই এই সকল সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন তাহলে সুস্থ হয়ে যাবেন


নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক অনেক ধরনের নিউজ পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন





Post a Comment

Previous Post Next Post